Showing posts with label Solutions. Show all posts
Showing posts with label Solutions. Show all posts

Tuesday, December 13, 2022

মশা: ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়াসহ যে ৫ টি মশাবাহিত রোগ বাংলাদেশে ছড়ায়

মশা: ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়াসহ যে ৫ টি মশাবাহিত রোগ বাংলাদেশে ছড়ায়

সাইয়েদা আক্তার

বিবিসি বাংলা, ঢাকা

২০ অগাস্ট ২০২১

 

পৃথিবীতে প্রায় সাড়ে তিন হাজার প্রজাতির মশা রয়েছে, এর মধ্যে মাত্র ১০০ টির মত প্রজাতি রোগ ছড়ায়।

এখনো পর্যন্ত বিজ্ঞানীদের গবেষণায় দেখা গেছে মশা থেকে ২০টির মত রোগ ছড়ায়।

পুরো পৃথিবীতে কীটপতঙ্গের আক্রমণে প্রতিবছর যত মানুষ মারা যান, তাদের মধ্যে মশাবাহিত রোগে মারা যান সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষ।

মশাবাহিত রোগ বিষয়ে সচেতনতা তৈরির উদ্দেশ্যে প্রতিবছর ২০শে অগাস্ট পালিত হয় বিশ্ব মশা দিবস।

বাংলাদেশের মশা

কীটতত্ত্ববিদ এবং গবেষকেরা বলছেন, বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত ১২৩ প্রজাতির মশার খোঁজ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ঢাকাতেই ১৪টি প্রজাতির মশা পাওয়া যায়।

কীটতত্ত্ববিদ এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশার বিবিসিকে বলেছেন, বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত মশাবাহিত পাঁচটি রোগের কথা জানা যায়।

এর মধ্যে রয়েছে ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়া, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া এবং জাপানিজ এনসেফালাইটিস।

ম্যালেরিয়া

স্ত্রী অ্যানোফিলিস মশা ম্যালেরিয়া রোগের জীবাণু ছড়ায়। বাংলাদেশে মোট ৩৬ প্রজাতির অ্যানোফিলিস মশা দেখা যায়, এদের মধ্যে সাতটি প্রজাতি বাংলাদেশে ম্যালেরিয়া রোগ ছড়ায়।

অধ্যাপক কবিরুল বাশার বলেছেন, এই সাত প্রজাতির মধ্যে চারটি প্রজাতি ম্যালেরিয়ার প্রধান বাহক বাংলাদেশে।

এই মূহুর্তে বাংলাদেশের ১৩টি জেলার ৭২টি থানায় ম্যালেরিয়া রোগের উপস্থিতি রয়েছে। মূলত পার্বত্য ও সীমান্ত এলাকাতেই ম্যালেরিয়া বেশি দেখা যায়। এটি গ্রীষ্মকালে হয়।

২০০৮ সালে বাংলাদেশে প্রায় ৮৫ হাজার মানুষ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন, মারা যান ১৫৪ জন। পরে এ সংখ্যা কমে আসে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. আফসানা আলমগীর খান‌ বিবিসিকে বলেছেন, এখন ম্যালেরিয়া প্রকোপের ৯০ শতাংশের বেশি হয় দেশে তিন পার্বত্য জেলায়।

তিনি জানিয়েছেন, ২০৩০ সালের মধ্যে দেশ থেকে ম্যালেরিয়া নির্মূলের পরিকল্পনা নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কাজ করছে।

ফাইলেরিয়া

কিউলেক্স মশার দুটি প্রজাতি এবং ম্যানসোনিয়া মশার একটি প্রজাতির মাধ্যমে বাংলাদেশে ফাইলেরিয়া রোগ ছডায়।

ফাইলেরিয়া রোগে মানুষের হাত-পা ও অন্যান্য অঙ্গ অস্বাভাবিকভাবে ফুলে ওঠে। একে স্থানীয়ভাবে গোদ রোগও বলা হয়।

বাংলাদেশের ৩৪টি জেলায় ফাইলেরিয়া আক্রান্ত রোগী দেখা যায়।

ডেঙ্গু

এডিস মশার দুইটি প্রজাতি- এডিস ইজিপ্টি এবং অ্যালবোপিকটাস, মূলত ডেঙ্গু ভাইরাসের জীবাণু ছড়ায়।

এডিস মশা পাত্রে জমা পরিষ্কার পানিতে জন্মায়। সাধারণত বর্ষাকালে এর ঘনত্ব বেশি হয়, ফলে ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাবও এ সময়ে বেড়ে যায়।

কিন্তু বাংলাদেশে চলতি বছর করোনাভাইরাস মহামারির পাশাপাশি ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ অনেকগুন বেড়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর জানুয়ারি থেকে ১৭ই অগাস্ট পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৬,৬৫০ জন মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

ডেঙ্গু জ্বরে সাধারণত তীব্র জ্বর ও সেই সঙ্গে সারা শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা হয়ে থাকে।

তীব্র পেটে ব্যথাও হতে পারে। শরীরে বিশেষ করে মাংসপেশীতে তীব্র ব্যথা হয়। জ্বরের ৪/৫ দিন পার হলে শরীরজুড়ে র‌্যাশ বা ঘামাচির মত লালচে দানা দেখা দেয়।

সাথে বমি ভাব, এমনকি বমিও হতে পারে।

ডেঙ্গু গুরুতর হলে রক্তে প্লাটিলেট কমে যায়, চোখের কোনা, দাঁতের মাড়ি বা নাক থেকে রক্তক্ষরণ হতে পারে।

ডা. আফসানা আলমগীর খান‌ বলেছেন, বাংলাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর প্রধাণ কারণ হচ্ছে আক্রান্ত হবার পর পরিস্থিতি খারাপ না হওয়া পর্যন্ত লোকে ডাক্তারের কাছে যায় না।

তিনি বলেন, লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা মাত্র চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। সথে রক্তে প্লাটিলেটের পরিমাণ খেয়াল রাখতে হবে।

চিকুনগুনিয়া

চিকুনগুনিয়া রোগও এডিস মশার মাধ্যমে ছড়ায়। ২০০৮ সালে বাংলাদেশে প্রথম চিকুনগুনিয়া ধরা পড়ে।

চিকুনগুনিয়া জ্বরের লক্ষণ সাধারণ ভাইরাল ফিভারের মত।

তবে মাথাব্যথা, বমি ভাব, দুর্বলতা, সর্দি-কাশি, এবং র‌্যাশের সঙ্গে শরীরে হাড়ের জয়েন্ট বা সংযোগস্থলে তীব্র ব্যথা হয়।

চিকুনগুনিয়া হলে অধিকাংশ সময় তিন থেকে চার দিনের মধ্যে জ্বর সেরে যায়। কিন্তু হাড়ের সংযোগস্থলগুলোতে হওয়া ব্যথা কারো কারো ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ভোগায়।

জাপানিজ এনসেফালাইটিস

অধ্যাপক কবিরুল বাশার বলছেন, জাপানিজ এনসেফালাইটিস রোগটি কিউলেক্স মশার মাধ্যমে ছড়ায়।

১৯৭৭ সালে মধুপুর বন এলাকায় প্রথম জাপানিজ এনসেফালাইটিস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছিলেন।

এরপর বিভিন্ন সময়ে রাজশাহী, রংপুর, চট্টগ্রাম এবং খুলনা অঞ্চলে এই রোগটি পাওয়া যায়।

অধ্যাপক বাশার বলছেন, বাংলাদেশে মশাবাহিত এই পাঁচ ধরণের রোগই মূলত দেখা যায়।

তবে কয়েক বছর আগে বাংলাদেশে জিকা ভাইরাস আক্রান্ত দুইজন রোগী শনাক্ত হয়েছিলেন।

এরপর গত কয়েক বছরে আর জিকা ভাইরাস আক্রান্ত কাউকে শনাক্তের কথা শোনা যায়নি।

ফলে বাংলাদেশে এর অস্তিত্ব আছে বলে তিনি মনে করেন না।

কীভাবে মশাবাহিত রোগ থেকে সুস্থ থাকবেন

মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হবার আগেই সতর্ক হবার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ আক্রান্ত হবার পর সঠিক সময়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন না হলে মৃত্যুসহ নানা ধরণের জটিলতার ঝুঁকি বেড়ে যায়

ডা. আফসানা আলমগীর খান এবং অধ্যাপক কবিরুল বাশারের পরামর্শ অনুযায়ী মশাবাহিত রোগ থেকে সুস্থ থাকার কয়েকটি উপায় বলছেন, যা এরকম

    • ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার এই দুইটি রোগের জন্যই দায়ী এডিস মশা সাধারণত সকালের দিকে এবং সন্ধ্যার আগে এডিস কামড়ায়। ফলে এই দুই সময়ে ঘরের দরজা জানালা বন্ধ রাখতে হবে
    • ঘুমানোর সময় মশারি খাটিয়ে ঘুমাতে হবে
    • বাড়ির ছাদে বা বারান্দার ফুলের টবে, নির্মাণাধীন ভবনে, বাতিল টায়ার কিংবা প্লাস্টিক কন্টেইনার- কোথাও যাতে তিন থেকে পাঁচদিনের বেশি পানি জমা না থাকে, সে ব্যবস্থা করতে হবে
    • মশার কামড় থেকে বাঁচতে নানা ধরণের রিপেলেন্ট অর্থাৎ মশা তাড়ানোর পণ্য যেমন বিভিন্ন ধরণের কয়েল, স্প্রে, ক্রিম জাতীয় পণ্য ব্যবহার করা, তবে এর মাত্রা ও প্রয়োগ সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে।

এগুলো সবই মশাবাহিত কোন রোগে আক্রান্ত হবার আগের সতর্কতা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আক্রান্ত হলে দ্রুত চিকিৎসকের শরাণাপন্ন হয়ে চিকিসা নিতে হবে।

মশা তাড়ানোর প্রাকৃতিক পদ্ধতি

বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ মনে করেন মশা তাড়াতে কয়েল বা স্প্রে ব্যবহার না করে প্রাকৃতিক উপায় চেষ্টা করে দেখা যেতে পারে।

তবে ঢাকায় মশার সংখ্যা যেভাবে বেড়েছে তাতে এসব কায়দা কতটা খাটবে সে আশংকাও রয়েছে।

অনেক বছর ধরে মশা তাড়াতে ব্যবহার করা হচ্ছে এমন কয়েকটি প্রাকৃতিক পদ্ধতি নিচে বর্ণনা করা হলো:

    • নিমে মশা তাড়ানোর বিশেষ গুণ রয়েছে। প্রাচীনকালে মশা তাড়াতে নিমের তেল ব্যবহার করা হত। ত্বকে নিম তেল লাগিয়ে নিলে মশা ধারে-কাছেও ভিড়বে না বলে প্রচলিত।
    • বলা হয়ে থাকে মশা কর্পূরের গন্ধ সহ্য করতে পারে না। ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে কর্পূর দিয়ে রাখলে মশা পালিয়ে যায়।
    • লেবু আর লবঙ্গ একসঙ্গে রেখে দিলে ঘরে মশা থাকে না বলে প্রচলিত আছে। এগুলো জানালায় রাখলে মশা ঘরে ঢুকতে পারবে না
    • ব্যবহৃত চা পাতা ফেলে না দিয়ে রোদে শুকিয়ে সেটা জ্বালালে চা পাতার ধোঁয়ায় ঘরের সব মশা-মাছি পালিয়ে যাবে। কিন্তু এতে শ্বাসতন্ত্রের ক্ষতি হবে না।

মশা নিয়ে কয়েকটি মজার তথ্য

    • একটি মশা সেকেন্ডে প্রায় ৩০০-৬০০ বার ডানা ঝাপটায়, মশা ওড়ার সময় এই ডানা ঝাপটানোর শব্দই শুনি আমরা
    • কেবলমাত্র স্ত্রী মশাই মানুষকে কামড়ায়, পুরুষ মশা নয়।
    • মশা ঘণ্টায় প্রায় দেড় মাইল বেগে উড়তে পারে
    • ডিম ফুটে বের হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই মশা মানুষকে কামড়ে রক্ত শুষে নেয়
    • মশা স্তন্যপায়ী প্রাণীকে কামড়ানোর পাশাপাশি পাখি ও সরীসৃপের শরীরেও হুল ফোটায়
    • মশা তার নিজের ওজনের তিনগুণ রক্ত শুষে নিতে পারে

 


Sunday, December 11, 2022

Thursday, March 3, 2022

কুকুর এখন বন্যপ্রাণীর জন্য বিরাট হুমকি

কুকুর এখন বন্যপ্রাণীর জন্য বিরাট হুমকি

 


 

কুকুর হয়তো মানুষের সবচেয়ে বিশ্বস্ত বন্ধু, কিন্তু এই জন্তুটি এখন বন্যপ্রাণীর জন্য বিরাট হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন প্রধানত কুকুরের কারণে প্রায় এক ডজন পাখী এবং পশুর প্রজাতি বিলীন হয়ে গেছে।

শুধু সেটাই নয়, বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের পরিবেশ বিষয়ক সংবাদদাতা নভিন সিং খাড়কা তাদের গবেষণাকে উদ্ধৃত করে বলছেন সারা বিশ্বে প্রায় একশ প্রজাতির পাখী এবং জীব-জন্তু কুকুরের কারণে হুমকিতে পড়েছে।



বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ-বাদীরা বলছেন, বুনো এবং ঘর-পালানো বেওয়ারিশ কুকুরের কাছ থেকে এই হুমকির কথা নজরের বাইরে থেকে যাচ্ছে।

দক্ষিণ আমেরিকার দেশ চিলিতে সাম্প্রতিক এক গবেষণার উপসংহারে বলা হয়েছে, বন্যপ্রাণী বাঁচাতে বুনো বেওয়ারিশ কুকুর নিয়ন্ত্রণ জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেখা গেছে, অনেক কুকুর মালিক বিষয়টিকে গুরুত্ব দেন না এবং তারা তাদের কুকুরকে ছেড়ে রাখেন

চিলির গবেষণায় জড়িত ছিলেন এডওয়ার্ডো সিলভা-রডরিগেজ। তিনি বিবিসিকে বলেন - তিন প্রজাতির হরিণ সহ অধিকাংশ বড় স্তন্যপায়ী জীবজন্তু কুকুরের হাতে নিয়মিত হেনস্থা হচ্ছে। অনেকসময় কুকুর তাদের মেরে খেয়ে ফেলছে।

 

১০০ কোটি কুকুর :

গৃহপালিত, বেওয়ারিশ এবং বুনো মিলিয়ে সারা বিশ্বে কম-বেশি ১০০ কোটি কুকুর আছে।

এগুলোর কত শতাংশ ঘর-পালানো বেওয়ারিশ এবং বুনো - সে সম্পর্কে সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই, তবে এদের সংখ্যা বাড়ছে।

"বিষয়টি খুবই উদ্বেগের," বিবিসিকে বলেন পরিবেশবাদী সংস্থা আইইউসিএনের পিয়েরো জেনোভেসি।

"মানুষের সংখ্যা যত বাড়ছে, সেই সাথে বাড়ছে কুকুরের সংখ্যা। এই সমস্যা আরো তীব্রতর হতে পারে।।"

 

কুকুরের হুমকিতে পড়া বন্যপ্রাণী :

বুনো এবং বেওয়ারিশ কুকুরের কারণে হুমকিতে পড়েছে প্রায় ২০০ প্রজাতির বন্যপ্রাণী, যাদের অর্ধেকই স্তন্যপায়ী, ৭৮টি পাখী, ২২টি সরীসৃপ এবং তিনটি উভচর।

এদের মধ্যে ৩০টি প্রজাতি বিলীন হওয়ার হুমকিতে। ৭০টির অবস্থা বিপজ্জনক।

সবচেয়ে বিপজ্জনক এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে এশিয়ার কিছু অঞ্চল, মধ্য এবং দক্ষিণ আমেরিকা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব এলাকায় প্রচুর বেওয়ারিশ কুকুর রয়েছে, যেগুলো বড় ধরণের বিপদ তৈরি করেছে।

 

নানামুখী প্রভাব :

কুকুর প্রধানত পাঁচভাবে বন্যপ্রাণীর ক্ষতি করছে।

তারা বন্যপ্রাণীকে হত্যা করছে, পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করছে, বন্যপ্রাণীর ভেতর রোগ ছড়াচ্ছে, খাবারে ভাগ বসাচ্ছে এবং কাছাকাছি প্রজাতির সাথে যৌন সঙ্গম করে বংশ বিস্তার করছে।

পোল্যান্ডে একটি গবেষণায় দেখা গেছে, বুনো কুকুর বনবিড়ালের গর্তে ঢুকে তাদের শিকার করা খাবার নিয়ে যাচ্ছে।

আরেক গবেষণা বলছে, নিউজিল্যান্ডে কোয়েল সহ অন্তত আট ধরণের পাখী কুকুরের কারণে বিলীন হয়ে গেছে।

 

কুকুরের তাড়া :

কুকুর বন্যপ্রাণীর জন্য ভীতিকর হয়ে দাঁড়িয়েছে, তার বহু ভিডিও নমুনা রয়েছে।

একটি দেখা যাচ্ছে - তিব্বতে একটি স্নো লেপার্ড বা চিতাবাঘকে তিনটি বুনো হয়ে যাওয়া কুকুর ঘিরে ধরেছে। আরেকটিতে দেখা যাচ্ছে, তিনটি কুকুর একটি পোলার বিয়ারকে (মেরু ভালুক) কোণঠাসা করে ফেলেছে।

 

চিলিতে এক গবেষণা বলছে, পুডু নামে ক্ষুদ্র প্রজাতির যত হরিণকে চিকিৎসার জন্য আনা হয়, তাদের ৭০ শতাংশেরই জখমের কারণ কুকুরের কামড়।

ব্রাজিলে ৩০টি জাতীয় উদ্যানের ওপর পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, গৃহপালিত ছাড়া কুকুর ৩৭ ধরণের বন্যপ্রাণীর জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারতের রাজস্থানে, বিলীন হওয়ার হুমকিতে পড়া গ্রেট ইন্ডিয়ান বাসটার্ডস নামে বিরল একটি পাখীর প্রজাতির জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ভারতে বাঘের জন্য সংরক্ষিত জঙ্গলগুলোতে কুকুর কতটা ঝুঁকি তৈরি করেছে, তা নিয়ে এখন একটি গবেষণা চলছে।

 

কুকুর এবং রোগবালাই :

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় কুকুর থেকে ছড়ানো রোগ বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে আন্তর্জাতিক সংস্থা ডব্লিউ ডব্লিউ এফের আর্নল্ফ কোনকে বিবিসিকে বলেন, "কুকুর অন্য প্রাণীকে মেরে খেয়ে ফেলছে - এটা যতটা না বিপজ্জনক তার চেয়ে অনেক বিপজ্জনক হচ্ছে কুকর যেভাবে অন্য প্রাণীদের মধ্যে রোগ ছড়াচ্ছে, বিশেষ করে ্যাবিজ বা জলাতঙ্ক।"

ইথিওপিয়া, ভারত এবং নেপালে ্যাবিজ ছাড়ানোর বহু নজির রয়েছে।

কী করা যাবে?

 

বুনো, বেওয়ারিশ ছাড়া কুকুরকে নিয়ে কী করা যাবে?

মেরে এদের সংখ্যা কমানোর কথা কেউ কেউ বললেও, তা নিয়ে বিতর্ক-দ্বিমত রয়েছে।

কেলি মিয়ারা, যিনি পশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের পরিচিত একটি মুখ, তার মতে, মেরে কুকুরের সংখ্যা কমানো সম্ভব নয়। এক জায়গায় মারলে, পাশের জায়গা থেকে নতুন কুকুর এসে শূন্যস্থান পূরণ করে ফেলবে।

 

"সঠিক কুকুর ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ধীরে ধীরে বেওয়ারিশ বুনো কুকুরের সংখ্যা কমাতে হবে। 'নিউট্রাল' করে তাদের বাচ্চা জন্ম দেওয়া বন্ধ করা যেতে পারে। নিয়মিত টিকা দিয়ে তাদের দ্বারা রোগ ছড়ানোর ঝুঁকি কমানো যেতে পারে।"

কুকুরের কারণে বন্যপ্রাণীর প্রতি হুমকি কীভাবে কমানো যাবে - তা নিয়ে এখনও সুনির্দিষ্ট কোনো কৌশল বিশ্বের কোথাও নেওয়া হয়নি।

 

 

সূত্র : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ বিবিসি বাংলা

https://www.bbc.com/bengali/news-47227787