Showing posts with label Articles. Show all posts
Showing posts with label Articles. Show all posts

Monday, December 12, 2022

International Dark Sky Week

International Dark Sky Week

 


International Dark Sky Week is held during the week of the new moon in April when people worldwide may turn off their lights to observe the beauty of the night sky without light pollution

The goals of the event are to:

1. Temporarily reduce light pollution and raise awareness about its effects on the night sky,

2. Encourage the use of better lighting systems that direct light downward instead of into the sky, and

3. Promote the study of astronomy.

This event always occurs in April, during the week of the new moon so that the sky can be as dark as possible for optimum viewing conditions.

Jennifer Barlow states, "The night sky is a gift of such tremendous beauty that should not be hidden under a blanket of wasted light. It should be visible so that future generations do not lose touch with the wonder of our universe." Barlow explains, "It is my wish that people see the night sky in all of its glory, without excess light in the sky as our ancestors saw it hundreds of years ago.

শিপ চর হলো বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণের সদ্য জেগে ওঠা দ্বীপ

শিপ চর হলো বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণের সদ্য জেগে ওঠা দ্বীপ


 


শিপ চর হলো বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণের সদ্য জেগে ওঠা দ্বীপ । এর অবস্হান হলো পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলার শেষ প্রান্ত হতে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপসাগরে । মানচিত্রে এর অবস্হান ২১.৭৮২২৯৪ ডিগ্রী অক্ষাংশএবং ৯০.৫৯২৯৫৩ ডিগ্রী দ্রাঘিমাংশ ।

Ship Island / শিপ চর হলো পটুয়াখালী জেলার রাঙ্গাবালি উপজেলার চর মন্তাজ ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত এলাকা হলেও এই দ্বীপ মাত্র কয়েক বছর হলো জেগে উঠেছে বলে জনবিরল । এখানে শুধুমাত্র জেলেরা মাছ ধরার সময় বিশ্রাম নেয় । এই দ্বীপে এখনো তেমন গাছপালা জন্মায়নি । এই দ্বীপে এখন ধানসি বা বুনো ধান বা ধানিঘাস জন্মাচ্ছে । ধানসি  এর বৈজ্ঞানিক নাম Porteresia coarctata (Roxb.) । এটা ধান জাতীয় উদ্ভিদ । ধানসি মূলের  মাধ্যমে বংশ বৃদ্ধি করে ।অপর দিকে ধান গাছ বীজের মাধ্যমে বংশ বৃদ্ধি করে ।

এই ব্যতিক্রম ধর্মী উদ্ভিদ নতুন দ্বীপ বা চরে প্রথম দিকে জন্মায় এবং নতুন দ্বীপের মাটিকে শক্ত বা মজবুত করে যাতে মাটি পানি বা বাতাসের মাধ্যমে বিলীন না হয় । তারপর নতুন দ্বীপে উরি ঘাস জন্মায় । এর পর সুন্দর বনের শ্বাসমূল আছে এমন গাছ যেমন : সুন্দরী, গেওয়া, কেওড়া গাছ জন্মায় । এসব গাছ নতুন দ্বীপকে সমুদ্রে বিলীন হতে দেয় না । এসব গাছের পাতার লোভে কোন না কোনভাবে সুন্দর বনের প্রাণীরা এসব নতুন দ্বীপে এসে হাজির হয়ে বংশ বৃদ্ধি করে নতুন ইকোসিস্টেম বা পরিবেশ বৈচিত্র সৃষ্টি করে নতুন দ্বীপকে প্রান্তবন্ত করে তুলে ধরে ।

এই দ্বীপে যাওয়ার নিয়ম হলো :

১. ঢাকা হতে গলাচিপা উপজেলার শেষ প্রান্তের লঞ্চঘাটে যাওয়া ।

২.তারপর লঞ্চে করে চর মন্তাজ ইউনিয়নে যাওয়া ।

৩. চর মন্তাজে স্হানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ও ফরেস্ট অফিস হতে সোনার চর দ্বীপ যাওয়ার অনুমিত নেওয়া ।

কারণ –

চরমন্তাজ হতে চর আন্ডা/আন্ডার চর দ্বীপ/ চর আন্ডা গ্রাম হয়ে সোনার চর যেতে হয় । সোনার চর হতে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরেই শিপ চর ।

সোনার চর হলো অভয়ারণ্য । এখানে সুন্দরবনের জীব জন্তু ছাড়া মানুষ থাকা নিষিদ্ধ । কারণ এটাকে ফরেস্ট অফিসের লোকরা পাহাড়া দেয় ।

সোনার চরের সমুদ্র সৈকত সেন্ট মার্টিন ও ছ্যাড়া দ্বীপের পর হলো বঙ্গোপসাগরের সর্বশেষ সমুদ্র সৈকত । এটা অবিকল সুন্দরবনের মতো । শুধু বাঘ নেই ।

 

৪. চরমন্তাজের শেষ সীমা পেরিয়ে চর আন্ডা / আন্ডার চর নাম দ্বীপে খেয়া নৌকায় করে যেতে হবে । চর আন্ডাতে একটা প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে । হাতে গোনা কয়েকটা পাকা বাড়ি আছে । এটা চরমন্তাজ ইউনিয়নের গ্রাম । লোক সংখ্যা ২ হাজারের মতো ।

চর আন্ডা/ আন্ডার চর দ্বীপ এলাকা হওয়ায় এখানে শহরের মতো তেমন কোন সুবিধা নেই । দ্বীপের বৈশিষ্ট্য অনেকটা সুন্দর বনের মতো । সুন্দরবনের গাছ এখানে রয়েছে । সুন্দরবন ও গ্রামের ছোঁয়া দুটোই এখানে পাওয়া যায় ।

৫. চর আন্ডা / আন্ডার চরের  দক্ষিণের শেষ সীমা হতে ট্রলারে করে সোনার চরের ঘাটে যেতে হবে । যেতে সময় লাগে ২ মিনিট ।  সেখানে বন কর্মকর্তাদের কাছ হতে অবস্হানের অনুমতি নিতে হবে । সোনার চরে রাতে থাকা নিষিদ্ধ ।

 

৬. সোনার চর সৈমুদ্র সৈকত হতে ১০ কিলোমিটার দূরে শিপ চরের অবস্হান । মানচিত্রে এর অবস্হান ২১.৭৮২২৯৪ ডিগ্রী অক্ষাংশএবং ৯০.৫৯২৯৫৩ ডিগ্রী দ্রাঘিমাংশ ।

সুতরাং ট্রলারে করে এই দ্বীপে যেতে হবে ।

শিপ চর-এর বৈশিষ্ট্য :

১. শিপ চর  একটা ফুটবল মাঠের সমান আয়তনের ছোট দ্বীপ। লম্বায় বড় জোড় ৩০০ ফুট ও পাশে ৩০০ ফুট । বাকি অংশ অধিকাংশ সময় বাকি অংশ সমুদ্রের পানির নিচে থাকে ।

২. দ্বীপটা দুইটা অংশে বিভক্ত । অনেকটা ধনুকের তীরের মতো দেখতে । মাঝে একটা অগভীর খাল আছে ।

৩. সামান্য কিছু ছোট গাছ  আছে ।

৪. শিপ চরের পর সমুদ্রে পটুয়াখালী জেলা বরাবর বাংলাদেশের আর মাটি নেই ।

৫.বিশ্রাম নেওয়ার জন্য তাবুর বসানোর পর ১০ ফুট দুরে সমুদ্রের জোয়ারের পানি দেখা যায় । সহজ কথা, এখানে আসলে চার দিকে পানি আর একটা গভীর শূণ্যতা অনুভব হয় ।

৬. শুয়ে থাকলে সমুদ্রের গর্জন কানে ধরা দেয় ।

৭. অভিজ্ঞ জেলেদের সাথে থেকে রাতে পূর্ণিমার জোছনার আলো উপভোগ করা যেতে পারে শিপ চরে কিছু সময় অবস্হান করে ।

৮. শীতকালে বঙ্গোপসাগরের চর বা দ্বীপ ভ্রমণ করা উত্তম হওয়ায় শিপ চরে শীত কালে ভ্রমণ করতে যেতে হয় ।

৯. সমুদ্রের রূপালী আভা, পূর্ণিমার জোছনা, হাল্কা হিম হিম বাতাস,ভোরের কুয়াশার চাঁদর, সকালের শিশির, সকাল ও বিকেলে একই সহানে সূয় উদয় ও অস্ত পর্যবেক্ষণ, রাতে পরিস্কার আকাশের নক্ষত্রমালা দেখা ও সমুদ্রের টেউয়ের ছোঁয়া পাওয়ার জন্য সর্বোত্তম স্হান হলো চর আন্ডা, সোনার চর ও শিপ চর ।

সাবধানতা –

 ১.ট্রলারের ইঞ্জিন নষ্ট হয় সে দিকে সতর্ক থাকতে হবে ।

২. সমুদ্রে ৩ নং বিপদ সংকেত থাকলে ভ্রমণ হতে বিরত থাকতে হবে ।

৩. ভ্রমণের জন্য লাইভ জ্যাকেট, তাবু ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রসহ নূন্যতম ১০ কেজি বস্তু নেওয়ার মতো স্বাস্হ্য ও ধৈর্য্য রাখতে হবে ।

৪. স্হানীয় জনগণের সাথে সৌহার্দপূর্ণ ব্যবহার বজায় রাখতে হবে ।

৫. এসব দ্বীপ বা চরাঞ্চলের এর কাদামাটি খুব নরম হওয়ায় অনেক স্হানে কোমড় পরিমান ডুবে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ।  সুতরাং সতর্ক থাকতে হবে ।

৬. শব্দ দূষণ করা যাবে না । ময়লা আবর্জনা যথাস্হানে ফেলতে হবে ।

 

 

আন্ডার চর, সোনার চর ও শিপ চর গবেষক ও  রোমাঞ্চপ্রিয়দের কাছে গুরুত্বপূর্ণ । কারণ:

১. এগুলো পরিবেশের জীবন্ত যাদুঘর ।

২. দ্বীপ কীভাবে গড়ে ওঠে ও  দ্বীপের জীব বৈচিত্র কীভাবে সৃষ্টি হয় তা জানা যায় ।

৩. বায়ু দূষণ ও আলোক দূষণ কম থাকায় মহাকাশ গবেষণা সহজতর হয় ।

৪. সমুদ্র বিজ্ঞান বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করার উৎকৃষ্ট স্হান ।

৫. নেচার ফটোগ্রাফির জন্য উত্তম স্হান ।

৬.যাদের টেলিস্কোপ আছে ও ডিএসএলআর ক্যামেরা আছে তারা আকাশের গ্রহ নক্ষত্রের ছবি সুন্দরভাবে তুলে পারেন এখানে।

৭. রোমাঞ্চপ্রিয় ও ভ্রমণ প্রিয় লোকদের জন্য  উৎকৃষ্ট স্হান ।

 

 

জেনে রাখা ভাল:

১. শিপ চর যেখানে অবস্হিত সেখানে এক সময় বড় একটা জাহাজ ডুবে যায় । জাহাজের চার পাশে পলি জমে দ্বীপটি সৃষ্টি হয়েছে বলে দ্বীপটার নাম জেলেরা দেয় শিপ চর ।

২. আন্ডার চর ( অফিসিয়াল নাম চর আন্ডা ) নাম হওয়ার কারণ দ্বীপটা দেখতে ডিমের মতো ।

৩. চর মন্তাজ দ্বীপ/ ইউনিয়নের নাম হয়েছে জনৈক মন্তাজ নামক লোকের নাম অনুযায়ী ।

৪. সোনার চরের নাম সোনার চর হওয়ার কারণ হলো :

সোনার চরের সৈকতের বালিতে সূর্যের আলো যখন প্রতিফলিত হয় তখন সোনার চরের বালিকে সোনার মতই উজ্জ্বল মনে হয়। বলা যায় সূর্যের আলোতে রাঙ্গানো এক স্বর্ণময় বালুকাবেলা ।

 

উপসংহার :

পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার শেষ সীমা হতে সমুদ্র পথে সোনার চরের দূরত্ব ৮০ কিলোমিটার । সোনার চর হতে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে শিপ চর । এই ভ্রমণ পথের ৮০ কিলোমিটার অনেকটা নদীতে লঞ্চ ভ্রমণের মতো । নতুনদের জন্য  সোনার চর হতে শিপ চর সমুদ্র পথে ভ্রমণ অনেকটা বিপদ সংকুল । কারণ এই ভ্রমণপথটা সমুদ্রে । সোনার চরের আগের জলপথ হলো বিভিন্ন নদী ও চরের খাল দিয়ে লঞ্চ ভ্রমণ ।

যারা শিপ চর ভ্রমণ শেষে চর আন্ডা/ আন্ডার চরে পূর্ণিমায় রাত্রি যাপন করেছেন তারা জীবনের শ্রেষ্ঠতম আনন্দ উপভোগ করেছেন বলে তাদের অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করেছেন ।

 

গবেষক ও রোমাঞ্চপ্রিয়বৃন্দ আছেন যারা এসব দ্বীপ নিয়ে জানতে আগ্রহী ও গবেষণা করতে আগ্রহী তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য অনুরোদ করছি ।

World Space Week

World Space Week



World Space Week (WSW) is an annual holiday observed from October 4 to 10 in over 95 nations throughout the world. World Space Week is officially defined as "an international celebration of science and technology, and their contribution to the betterment of the human condition". World Space week is organized every year by coordination of the World Space Week Association (WSWA) and the United Nations (UN).

On December 6, 1999, The United Nations General Assembly declared World Space Week as an annual event celebration to be commemorated between October 4 and 10. The choice of dates was based on recognition of two important dates in space history: the launch of the first human-made Earth satellite, Sputnik 1, on October 4, 1957; and the signing of the Outer Space Treaty on October 10, 1967.

World Space Week is the largest annual space event in the world. In 2019, World Space Week was celebrated with over 8,000 events in 96 countries. Events included school activities, exhibitions, government events, and special activities at planetaria around the world.

 

Each year, a theme for World Space Week is established by the Board of Directors of World Space Week Association. Under the theme "The Moon: Gateway to the Stars", many events of World Space Week 2019 focused on the 50th anniversary of the Apollo 11 landing, plans for human exploration of the Moon, and Lunar observation by telescope.

In 2022, theme of World Space Week is "Space and Sustainability." In 2021, "Women in Space" was the theme. In 2020, the theme for World Space Week was "Satellites Improve Life", and SES CEO Steve Collar was World Space Week 2020 Honorary Chair.

 

The World Space Week Association is a non-governmental, non-profit organization, which is supported by national coordinators in over 50 nations.

Its goals are to educate people around the world about the benefits that they receive from space, encourage use of space for sustainable economic development, foster enthusiastic education and interest in science and cooperation between nations through space outreach and education.

The association provides resources for educators in grade K-12.

A Calendar of Events from nations celebrating World Space Week is available.

 

Monday, January 31, 2022

পরিবেশ দূষনের নানা দিক

পরিবেশ দূষনের নানা দিক




পরিবেশ সভ্যতার এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। সভ্যতার ক্রমবিকাশ থেকেই মানুষ গড়ে তুলেছে তার পরিবেশ । পরিবেশকে রুদ্ধ করে পরিবেশকে জয় করার চিন্তা ভাবনার যেন শেষ নেই। মানুষ নিজেদের স্বার্থ রক্ষার উদ্দেশ্যে যেভাবে পরিবেশের উপর আঘাত হানছে তাতে পরিবেশ তার নিজস্ব আচরণে গোটা বিশ্বকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে মারছে। আমরা নিজেরাই এর জন্য দায়ী নিজেরাই নিজেদের পরিবেশকে ধ্বংস করে মহাবিপদ ডেকে নিয়ে আসছি। আর তার জন্য উন্নত বিশ্ব সবচেয়ে দায়ী। অপরিকল্পিত নগরায়ন শিল্পায়ন গড়ে তোলায় দূষিত হচ্ছে সুস্থ পরিবেশ। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মাধ্যমে মানুষের জলে ও স্থলে মহাশূন্যে আধিপত্য বিস্তার। কিন্তু মানুষের এ বিজয় মানুষকে পরাজয়ের মধ্যে ফেলে দিল। আজ আমরা এক ভয়ংকর সংকটের মুখোমুখি। কোন বিশেষ জাতি কিংবা কোন দেশের একার নয়। এই সংকট আজ বিশ্ব জুড়ে পৃথিবীর পরিবেশ নানাভাবে দূষিত হচ্ছে দিনের পর দিন। এ দূষণ পৃথিবীর পরিবেশকে নিয়ে যাচ্ছে ভয়ংকর ভবিষ্যতের দিকে। আজ জলে বিষ বাতাসে আতঙ্ক, মাটিতে মহাত্রাস।

মানুষের দৈনন্দিন কর্মকান্ডে সৃষ্ট ক্ষতিকর পদার্থ ও তা নির্গমনের কারণে স্বাভাবিক পরিবেশের উপর প্রভাব পড়লে তাকে দূষণ বলে। পরিবেশ দূষণ বিভিন্নভাবে হয়ে থাকে। বায়ু দূষণ, পানিদূষণ, শব্দ দূষণ এরমধ্যে অন্যতম। আমরা এত দিন দূষণ শব্দটি শুনে এসেছি, কিন্তু এর মধ্যে আছে পরিবেশের হাহাকার। পরিবেশ যত দূষণ হবে ঠিক ততই প্রতিশোধ নেবে মানব তথা সমগ্র জীবকুলের উপর। এখন আমাদের অবস্থা এমন পর্যায়ে পরেছে আমরা যদি সঠিক পথে না চলি তা হলে ভবিষ্যতের যে কুফল পরবে তার জন্য দায়ি হবে সুধুই মানুষ, আর কুফল ভোগ সমগ্র জীবকুল।

বিগত বছরে ৭৬ টির বেশি প্রজাতির প্রাণী এবং কয়েকশ প্রজাতির গাছপালা বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আমাদের অথনৈতিক উন্নতি হয়েছে।এর পরিনামে বাতাসে প্রতিবছর ২০ কোটি মেট্রিক টন কার্বন মনোক্সাইড সঞ্চিত হচ্ছে। বায়ুমন্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইড, সালফার ডাই অক্সাইড গ্যাসের পরিমাণ ক্রমশ বাড়ছে। প্রতিবছর ৬০ হেক্ট্রর জমি মরুভূমি হয়ে যাচ্ছে। প্রতি মিনিটে বালুকাকীর্ণ হয়ে পড়ছে ৪ হেক্ট্রর উর্বর ভূমি। এখনও বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে পরিবেশ দূষণের ভয়াবহতা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা নেই। দূষিত হচ্ছে নদীর পানি। পাহাড় কাটা, ফসলি জমি ধ্বংস বনাঞ্চল উজাড় করে পরিবেশের উপর মারাত্মক আঘাত হানছে। একটি দেশে ২৫% বনভূমি থাকার কথা। সেখানে বাংলাদেশে বনভূমি রয়েছে মাত্র ১৬%।

বাংলাদেশে যত্রতত্রভাবে গড়ে উঠছে শিল্প কারখানা। প্রতিনিয়ত দূষিত হচ্ছে নদীর পানি, চলছে নির্বিচারে পাহাড় কাটাঁ, ফসলি জমি ধ্বংস। বনাঞ্চল উজাড় করে পরিবেশকে প্রতিনিয়ত দূষিত করে চলেছে। বাংলাদেশে যেভাবে নদী দূষণ শুরু হয়েছে তাতে অচিরেই নানা দুর্যোগের মুখোমুখি হবে বলে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন। নদীর পানি ব্যবহার অনুপযোগী। ভূগর্ভস্থ পানির উপর অতি নির্ভরশীলতার কারণে ইতোমধ্যে সারা দেশে সুমিষ্ট জলের অভাব দেখা দিয়েছে। ভূগর্ভস্থ পানির অতিরিক্ত ব্যবহারে ভূগর্ভস্থ পানির লেভেল ক্রমেই নিচে নেমে যাচ্ছে। পাহাড় কেটে গড়ে তোলা হচ্ছে ঘরবাড়ি বহুতল ভবন। অন্যদিকে মাটি কাটার কবলে ধ্বংস হচ্ছে ফসলি জমি। রাজনৈতিক আশ্রয় প্রশ্রয়েও বাড়ছে দূষণের মাত্র। দেশের নদী দখলে প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যাক্তিদের হাত থাকায় ফলে দূষণ ও দখল নিয়নন্ত্রণ করা যাচ্ছে না এমন প্রতিবেদন পত্রপত্রিকায় বহুবার প্রকাশিত হয়েছে । দেশের অধিকাংশ তরল বর্জ্যে উৎপাদনকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানে নেই বর্জ্যে পরিশোধন (ইটিপি)। ফলে তরল বর্জ্যে দূষিত হয়ে পড়ছে নদীর পানি । পরিবেশ দূষণের মাত্রার পরিণতির কথা বিবেচনা করে পরিবেশ বিজ্ঞানীরা পরিবেশ দূষণ মুক্ত রাখার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। পৃথিবীতে মানুষের অস্তিত্বের স্বার্থে পরিবেশ দূষণ মুক্ত রাখা দরকার। এ দূষণ রোধ করার জন্য জণগনকে শিক্ষিত করে তুলতে হবে। সকলকে পরিবেশ দূষণ রোধে নিজ নিজ অবস্থান থেকে এগিয়ে আসতে হবে।

এসব দূষণ এর সবগুলো সম্পর্কে হয়তো আমরা অনেকেই কম জানি –

  • বায়ু দূষণ
  • পানি দূষণ
  • মৃত্তিকা দূষণ
  • আবর্জনা দূষণ
  • তেজষ্ক্রিয় দূষণ
  • শব্দ দূষণ
  • আলোক দূষণ
  • দৃশ্য দূষণ
  • তাপ দূষণ

চাষের জমি ভরাট হয়ে নগরায়ন হচ্ছে, উন্মুক্ত সমুদ্র সৈকত বন্দী হচ্ছে চিংড়ী চাষের কারণে, পাহাড় কেটে গড়ে উঠছে বস্তি, অল্প যা কিছু কল-কারখানা আছে তার অশোধিত বর্জ্যে বিষাক্ত হয়ে পড়েছে দেশের বিভিন্ন নদী নালা। জীবন সংগ্রামের এই অস্থির কষাঘাতে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের চাপে প্রকৃতি হচ্ছে নিষ্পেষিত, শোষিত ও দলিত। ক্ষুদ্র আয়তনের আমাদের এই দেশের পরিপ্রেক্ষিতে প্রকৃতি তথা পরিবেশ সংরক্ষণ ও পরিচালনা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বাঁচা মরার সাথে অবিচ্ছেদ্যভাবে সম্পর্কযুক্ত। বাস ট্রাক , লরি থেকে নির্গত কালো ধোঁয়া যত্রতত্র মুড়ির টিন, বাড়ি ঘরের ময়লা স্তূপের কারণে নদীপথে মান্দাতার আমলে লঞ্চ ষ্টীমার চলাচলের কারণে, স্যালো নৌকার আবির্ভাবের জন্য যেখানে সেখানে পরিবেশ দূষণকারী বর্জ্য ফেলে পরিবেশ দূষণ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করেছে। বিশ্বের সর্বাধিক বায়ু দূষিত ১৫টি শহরের ১৩টি হলো এশিয়ায়। এই দূষণ এশিয়ায় বছরে ১০ লাখ লোকের মৃত্যুর কারণ।। আমরা সর্বদাই উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক প্রবদ্ধির জন্য নিবেদিত। কিন্তু উন্নয়নের কেন্দ্র বিন্দু পরিবেশকে পাশ কাটিয়ে পরিবেশের উপর একছত্রভাবে জুলুম করে পক্ষান্তরে উন্নয়নের চাকাটির চলার পথই রুদ্ধ করছি। আজ তাই এহেন দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের সময় এসেছে। । শহর নগর এলাকা নির্মাণ বা সম্প্রসারণ, রাস্তাঘাট নির্মাণ ইত্যাদি কারণে এর ফলে নালা, ড্রেন ইত্যাদি মাটি জমে ভরাট হয়ে যাচ্ছে এবং জমাট পানি উপচে পড়ে বিভিন্ন সমস্যার কারণ ঘটাচ্ছে। তাছাড়া পাহাড় কাটার কারণে স্থানে স্থানে ধস নামছে। সে পাহাড়গুলিসহ আশ পাশের পাহাড়গুলি ভংগুর হয়ে যাওয়ায় এদের স্থায়িত্ব হুমকির সম্মুখীন। পাশাপাশি নৈসর্গিক সৌন্দর্য বিনষ্ট হচ্ছে, তা বন্য প্রাণীর অস্তিত্ব লোপ পাচ্ছে এবং জৈব বৈচিত্র বিলুপ্তির শেষ পর্যায়ে উপনীত হচ্ছে পানি চলাচল তথা ঢালুতে পানি নামায় যে প্রাকৃতিক নালাগুলি ছিল, সেগুলির অধিকাংশই ভরাট হয়ে বন্ধ হয়ে গেছে।

ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন বিশেষতঃ বাস ট্রাক থেকে নিঃসৃত কালো ধোঁয়া বায়ু দূষণ ঘটায়। তাই ত্রুটিমুক্ত যানবাহনের মান কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ ও ত্রুটিপূর্ণ যানগুলো বাতিল করার মাধ্যমে বায়ু দূষণ কমানো সম্ভব। যানজট কমানোর জন্য গণ পরিবহনের আবশ্যকতা রয়েছে। ট্রাফিক জ্যাম এবং সড়কের উপর যত্রতত্র যানবাহনের কারণে বায়ু দূষণ বৃদ্ধি পায়। জনস্বাস্থ্যের পর বায়ু দূষণের সরাসরি নেতিবাচক প্রভাবের সৃষ্টির ব্যাপারটি অনস্বীকার্য। শব্দ দূষণ শব্দ দূষণের কারণে মানুষের দৈনন্দিন জীবন দুঃসহ হয়ে পরেছে। বিভিন্ন পরিবহনের অনবরত বাজানো হর্ণ মানুষের শ্রবণেন্দ্রীয়কে করে তুলেছে অতিষ্ঠ। একটি সুস্থ মানুষের স্বাভাবিক শ্রবণ ক্ষমতা ৪৫ ডেসিবল গাড়ির হর্ণের মধ্যে সবচেয়ে বিপজ্জনক হচ্ছে, হাইড্রলিক হর্ণ, ১৯৯৭ সালে তা আমদানি এবং বিক্রি বেআইনী ঘোষণা করা হলেও আজ পর্যন্ত তা কার্যকর হয়নি। চিকিৎসকদের মতে উচ্চ গ্রামের প্রতিদিন ৪০ সেকেন্ড করে শব্দ গ্রহণ করবে কিছু দিনের মধ্যেই শ্রবণ যন্ত্র নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। উচ্চ শব্দ মানবদেহের জন্য বিশেষ ক্ষতির কারণ। পানি দূষণে আমরা পানিকে দূষিত করে তুলছি প্রতিনিয়ত।

শিল্পজাত বর্জ্য গার্হস্থ্য বর্জ্য ইত্যাদি নদীর পানিকে ক্রমশ দূষিত করে তুলছে। নদীর তীরে গড়ে উঠেছে শিল্প কারখানা, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ইত্যাদি আর বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নদীর বর্জ্য পদার্থ পরিত্যাগস্থল হিসাবে ব্যবহার করা হয়। সমুদ্র দূষিত হয়ে পড়ছে লোকালয়ে আবর্জনা কীটনাশক রাসায়নিক পদার্থ, তেজষ্ক্রিয় বর্জ্য পদার্থ, সমুদ্রগামী জাহাজ, সামুদ্রিক তেলখনির তেল নিঃসরনের কারণে সমস্ত বর্জ্য সমুদ্রে মাছের ডিম পাড়া সামুদ্রিক প্রাণী উদ্ভিদের দৃপ্তি ও বিকাশের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে। বিশেষ করে বিবিধ বর্জ্যের কারণে জলে দ্রবীভূত অক্সিজেনের মাত্রা হ্রা্‌স পাওয়ায় সামুদ্রিক প্রাণী ও উদ্ভিদের জীবন বিপর্যস্থ হয়ে পড়ে। বর্জ পরিবেশ দূষণে ক্ষতিকর পরিবেশ সংর্‌ক্ষণ আইন-১৯৯৫ এর আওতায় ১৯৯৭ সালে সরকার ঘোষিত কারকারখানার নির্গত ময়লা পানি ও বর্জ্য নির্গমনের গুণগতমান কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করার বিষয়টি নিশ্চিত করে পরিবেশেগত ছাড়পত্র কোন শিল্প প্রকল্পের অনুমোদন প্রক্রিয়ার একটি অংশ একথা উল্লেখ করে সুপারিশ করা হয়েছে শিল্প কারখানার কঠিন তরল ও বায়বীয় বর্জ্য ফেলার যথাযোগ্য স্থান নির্ধারণ এবং এগুলো কঠোরভাবে কার্যকর করার জন্য পরিবেশ আদালত স্থাপন, পলিথিনব্যাগ পচনশীল না হওয়ায় সহজে বিনষ্ট হয় না। পয়ঃপ্রণালীর প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে পরিবেশের মারাত্মক সমস্যা সৃষ্টি করে। কঠিন বর্জ্য পদার্থ যেমন – বোতল, টিনের ক্যান, কাঁচ বা কাগজের সামগ্রী, রিসাইক্লিং এবং আবর্জনাকে সারের বর্জ্যকে রিসাইকল্‌ড কাগজে, বর্জ্য প্লাষ্টিককে বার্নিশের কাজে ব্যবহৃত নতুন রঞ্জক ও ডাবের খোসাকে জ্বালানিতে পরিণত করার প্রযুক্তিকে উৎসাহিত করা। মেডিকেল বর্জ্য ফেলার যথাযথ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা ছাড়া কো্‌ন এলাকায় হাসপাতাল বা ক্লিনিকের নির্মাণের স্থান নির্দিষ্ট করতে না দেওয়া। উপযুক্ত পরিবহণ ব্যবস্থা আবর্জনা ফেলার নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি পর্যাপ্ত পয়ঃনিষ্কাশন, মল নিষ্কাশন ব্যবস্থা ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে পরিবেশ সহায়ক প্রযুক্তির ব্যবহার চালূ করা. অপর্যাপ্ত পয়ঃনিষ্কাশন ও পয়ঃনালা ব্যবস্থা আবর্জনা সংগ্রহ ব্যবস্থায় জটিলতা রয়েছে। আমাদেরকে এখন উন্নয়ন পরিবেশের সংঘাতের আবর্তে হোচট খেয়ে চলতে হচ্ছে। গোটাবিশ্ব আজ পরিবেশ পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিঘ্ন। কারণ সুন্দর, দূষণমুক্ত পরিবেশ বিশ্বে প্রতিটি মানুষেরই কাম্য দ্রুত নগরায়ন ও শিল্পায়ন পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। অপরিকল্পিত উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ফলে পরিবেশ দূষণের মাত্রা যেভাবে দিন দিন বেড়ে চলছে তাতে করে অদূর ভবিষতেই পৃথিবী মানুষের বসবাসের অনুপযোগী হয়ে যাবে। বিশ্বের প্রত্যেকটি দেশে পরিবেশ বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। বিধিবিধান এবং আইনের যথাযথ প্রয়োগ দ্বারা উন্নত দেশগুলি তাদের পরিবেশ রক্ষা করছে। এদের মতো চলুন আমরাও চেষ্টা করি। একটু সচেতন হলে পরিবশটা রক্ষা করা খুব্‌ সহজ কাজ। বস্তুত বিগত কয়েক বছর দেশে পরিবেশগত সমস্যা যেমন প্রকট হয়েছে সাথে সাথে পরিবেশ বিষয়ে মানুষের আগ্রহও সচেতনতাও বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। উন্নয়ন কর্মী এবং নীতি নির্ধারকদের মধ্যে পরিবেশের বিভিন্ন বিষয় বর্তমানে ব্যাপক গুরুত্বের সাথে বিবেচিত হচ্ছে ।